সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ০৯:২০ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদনঃ
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় ৪ দিন আগে পানি বৃদ্ধির ক্ষত না শুকাতেই আবারও তিস্তায় ভারতের উজান থেকে নেমে এসেছে ঢল। এতে উপজেলার ৭ ইউনিয়নের চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চল এলাকার বসবাসরত ৭ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙন।
কোলকোন্দের পূর্ববিনবিনা চর হতে লক্ষ্মীটারীর পশ্চিম ইচলী সংযোগ বেড়িবাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় বাগেরহাট বাজার এলাকাসহ আশ্রয়ণ প্রকল্পে পানি ঢুকে পানিবন্দি মানুষজন। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগে বালু ভরাট করে রেখেছে। ভাঙনে কোলকোন্দ ইউনিয়নের পূর্ববিনবিনা ও পশ্চিম ইচলীর ১৭ পরিবারের বসত ভিটা তিস্তার গর্ভে হারিয়ে গেছে।
এদিকে, এক রাতে তিস্তার পানি বৃদ্ধি হওয়ায় রাস্তা-ঘাট তলিয়ে গেছে। এতে করে চলাচলে সমস্যা বেড়েছে। এছাড়াও ভাঙন হুমকিতে রয়েছে রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ, মসজিদ ও চাষাবাদ জমি। পানিবন্দি মানুষগুলো রাস্তাসহ উঁচু স্থানে পলিথিনের ছাউনি তৈরি করে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি ও ঘরের আসবাবপত্র নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে ভাসমান চুলায় কোনো রকম রান্না করে দিন পার করতে দেখা গেছে। ছোট নৌকা, বাঁশ ও কলা গাছের ভেলায় অনেকে চলাচল করছে।
লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলি, শংকরদহ, বাগেরহাট আশ্রয়ন, পূর্ব ইচলির ৩ হাজার, কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা, মটুকপুর, চিলাখাল, খলাইরচরসহ নিম্ন এলাকার ৩ হাজার, নোহালীর মিনার বাজার, কচুয়াচর, বৈরাতী বাঁধের ধার, চর নোহালী, বাগডহরা চরের কয়েকশ, মর্নেয়া ইউনিয়নের মর্নেয়াচর, তালপট্টি, আলাল চর, নরসিং চর, গজঘণ্টা ইউনিয়নের কালির চর, ছালাপাক, গাউছিয়া বাজার, জয়দেব, মইশাসুর, রামদেব চরসহ আলমবিদিত ও গঙ্গাচড়া ইউনিয়নের তিস্তা বেষ্টিত নিম্ন এলাকার প্রায় ৩শ পরিবার পানিবন্দি।
কেল্লার পাড়ের মহির উদ্দিন, বাগেরহাট আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকার বাসিন্দা সজিনা, জরিনা, মাজেদা, বিনবিনা চরের মহাম্মদ, মান্নান জানান, ৪ দিন আগে পানিবন্দি ছিলাম, সে পানি না শুকাতে আবার পানিবন্দি হলাম।
কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু জানান, তিস্তার পানি বৃদ্ধি ফলে ভাঙন ও বন্যার দেখা দেওয়ায় বিনবিনা চরে ৭ পরিবারের বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে এবং ৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। তার ইউনিয়নে ৫৭৫ পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলীমা বেগম জানান, পানিবন্দি পরিবারের জন্য ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার রাতে তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।