রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৭:৪০ পূর্বাহ্ন
‘আমি যখন বাড়ি থেকে বের হই ছেলে জিজ্ঞেস করল, বাবা কোন অনুষ্ঠানে যাচ্ছ। আমি বললাম টাউন হলে যাত্রা উৎসব হবে, সেই অনুষ্ঠানে যাচ্ছি। ছেলে বলল, যাত্রা কী বাবা?’ কথাগুলো রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসানের।
শুক্রবার সন্ধ্যার পরে পাঁচ দিনব্যাপী যাত্রা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে যাত্রা সম্পর্কে নতুন প্রজন্মের এই অভিব্যক্তি তুলে ধরেন। এ অঞ্চল থেকে হারিয়ে যেতে বসেছিল যাত্রা নামক বিনোদনের এই মাধ্যমটি। তিন দশকের বেশি সময় পরে যাত্রা উৎসবের আয়োজন রংপুরের সংস্কৃতি অঙ্গনে এনে দিয়েছে ব্যাপক সাড়া। করোনাভাইরাসের ভীতি কাটিয়ে সংস্কৃতি অঙ্গনে যোগ হয়েছে আবহমান বাংলার প্রায় হারিয়ে যাওয়া যাত্রা শিল্পের নতুন মাত্রা। ঝিমিয়ে পড়া বিনোদনের এই মাধ্যমটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে বিনোদন প্রেমী মানুষদের মাঝে। ফিরিয়ে এনেছে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য।
অভিনেতাদের ঝলমলে পোশাক, সংলাপ, বিবেকের চরিত্রে চিরচেনা উচ্চস্বরে গান হলভর্তি দর্শকদের মুগ্ধ করেছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে উৎসবের আয়োজন করেছে রংপুুুর যাত্রা ফেডারেশন ও রংপুর থিয়েটার। ‘যাত্রা হোক আমাদের প্রতিদিনের পারিবারিক বিনোদন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ১০১ মোমবাতি প্রজ্জ্বালন করে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ যাত্রা ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাসান কবির শাহীন। যাত্রা ফেডারেশনের রংপুুুর কমিটির সভাপতি আশরাফ উদ্দিন বাবুর সভাপতিত্বে যাত্রা উৎসবের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার রংপুুুর (উপসচিব) উপপরিচালক সৈয়দ ফরহাদ হোসেন। উদ্বোধনী দিনে মঞ্চস্থ হয় ভৈরব নাথ গঙ্গোপাধ্যায় রচিত ও মোহাম্মদুল হক মুকুল নির্দেশিত ‘দেবী সুলতানা’ যাত্রাপালা। পরিবেশনায় ছিল রংপুুুর থিয়েটার।
শনিবার একই মঞ্চে তরুণ সংঘের ‘জীবন নদীর তীরে’, ২১ মার্চ নবজাগরণ নাট্য সংঘের ‘অনুসন্ধান’, ২২ মার্চ দুর্জয় নাট্য সংঘের ‘জেল থেকে বলছি’ ও উৎসবের সমাপনী দিন ২৩ মার্চ রংপুুুর থিযেটার ‘রতন-চন্দ্রিকা’ পরিবেশিত হবে। উৎসবে রংপুুুর, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারীর পাঁচটি যাত্রাদল অংশ নিচ্ছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা পর এসব যাত্রা পালা পরিবেশিত হবে।