jatiobarta com
- ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২১ / ৩৩৯ বার পঠিত
সরকার বেলায়েতঃ রংপুর-ঢাকা মহাসড়কটি চারলেনে (ফোরলেন) উন্নীতকরণ কাজ চলছে। বর্ধিত সড়কের দু’ধারের জমি ও অবকাঠামোর ক্ষতি পুরন প্রদানের সরকারি সিদ্ধান্তের সুযোগে জমি এবং অবকাঠামোর মুল্য বেশী পেতে রংপুর-বগুড়া মহাসড়কের পীরগঞ্জে উপজেলা সীমানায় উভয়পার্শ্বে জমির মালিকরা রাতারাতি অসংখ্য বাসা ও নাম সর্বস্ব দোকান-মার্কেট নির্মান করে সাইন বোর্ড দিয়েছেন। নতুন করে অবকাঠামো নির্মানে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা উপেক্ষা করে এখনও নির্মানকাজ অব্যাহত রয়েছে। বিষয়টিতে রংপুর জেলা ভুমি অধিগ্রহন বিভাগের এক শ্রেণীর অসৎ কর্মকর্তা সরাসরি জড়িত মর্মে অভিযোগ রয়েছে।
যে কারনে ফোরলেন সড়কের নির্মান ব্যয় বেড়েই চলেছে। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, রংপুর-ঢাকা মহাসড়কটি সাসেক-২ (সাউথ এশিয়ান সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কর্পোরেশন) প্রকল্পের অধীনে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুরের মডার্ন পর্যন্ত ১৯০ কি.মি চারলেনের কাজ চললেও ছয় লেনের জন্য জমি অধিগ্রহন করা হচ্ছে। এরমধ্যে পীরগঞ্জ উপজেলা সীমানায় ২৫ কি.মি সড়ক রয়েছে। সড়কটির পীরগঞ্জ এলাকায় জমির মালিকরা অবকাঠামো ও জমির মুল্য বেশি পেতে সড়ক সংলগ্ন উভয়পাশে রাতারাতি সাইনবোর্ড সর্বস্ব পাকা ও আধা পাকা বাসা এবং নাম সর্বস্ব দোকান-মার্কেট নির্মান ও জমির শ্রেনী পরিবর্তন করছেন।
অথচ হাইকোর্টের নির্দেশনা ও মহাসড়কের বিধিমালা অনুযায়ী সড়কের উপরে, নীচে বা পরবর্তী ১০ মিটারের মধ্যে কোনকিছু নির্মান বা স্থাপনা করা যাবে না মর্মে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিলেও তা উপেক্ষা করে অবৈধ নির্মানকাজ অব্যাহত রয়েছে। জমির মুল্যের ৩ গুন আর অবকাঠামোর মুল্যের ২ গুন করে টাকা অধিগ্রহনে দেয়া হবে এমন সুযোগেই চলছে এই নিমৃান কাজের প্রতিয়োগিতা। অবৈধ কাজ। এতেই সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় বেড়ে গেছে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পীরগঞ্জের বড়দরগাহ থেকে দক্ষিণে খেদমতপুর পর্যন্ত প্রায় ২৫ কি.মি এলাকা অধিগ্রহনের আগেই পুরাতন টীনের ছাউনি দিয়ে ঘরের চালা আর ঢালাইকৃত একতলা ও দ্বিতল ভবনের কাজ করা হয়েছে। সড়কটির বড়দরগাহ,রাউতপাড়া,শুকান চৌকি,লালদীঘি, জামতলা সোনাকান্দর,বাসষ্ট্যান্ড,আংরার ব্রীজ,উজিরপুর,মজিদপুর,খেদমতপুর,তুলারাম মজিদপুর, মাদারহাট ও ধাপেরহাটসহ বেশকিছু স্থানে রাতারাতি স্থাপনা নির্মান হয়েছে। উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের প্রভাবশালী বাজাজ মোটর সাইকেল ব্যবসায়ী শাহজাহান মিয়া অন্যের জমি ঠিকা নিয়ে সড়কটির রামনাথপুর ইউনিয়নের রাজারামপুর মৌজায় এক বিশাল টীনের ছাউনীর বাসা নির্মান করেছেন।
এ বাসা নির্মান সম্পন্নের পরপরই তুলারাম মজিদপুরে অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুস সামাদ মিয়ার ‘মেসার্স নাহার ট্রেডিংসহ হাজেরা মার্কেট, গ্রামীন মার্কেট (এগ্রো), কৃষি মার্কেটসহ অনেকগুলো দোকান নির্মান করেছেন রাতারাতি। ব্যবসায়ী শাহজাহান আলী বলেন, অনেকেই বাসা-দোকান নির্মান করেছে। আমিও করেছি। সবাই মুল্য পেলে আমিও পাবো। জাফরপাড়া কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওঃ নজরুল ইসলাম সড়কের ধারে পুর্বে নির্মিত বাসার উপরতলায় টিনশেড নির্মান করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করেছেন রংপুর জেলা প্রশাসকের এল এ শাখায়। এতে তার পাওনা টাকার পরিমান অনেক বেড়ে যাবে। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিগ্রহন শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, জমির স্থির চিত্র ও ভিডিও ধারনের আগে নির্মিত অবকাঠামোর মুল্য দেয়া হবে।
আর অবৈধ স্থাপনা নির্মান বন্ধে সাইনবোর্ড দেয়া হয়েছে। সড়কটির নির্মানকাজে কর্মরত চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী প্রকৌশলী (সওজ) আফিত হোসেন বলেন, জমি অধিগ্রহনের জন্য সওজ থেকে জেলা প্রশাসনকে টাকা দেয়া হয়েছে। এদিকে ভুমি অধিগ্রহন ও ক্ষতিপুরণ প্রদানে নানা টালবাহানায় সড়কের নির্মানকাজের গতি অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। মহাসড়কের মাদারহাট এলাকার ২’শ ১২ টি পরিবার গত ৩ বছর ধরে দিনের পর দিন ঘুরেও রংপুর জেলা প্রশাসকের দপ্তরের ভুৃমি অধিগ্রহন বিভাগ থেকে ক্ষতি পুরনের চেক পাননি